রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

ঘনিষ্ঠ হানিপ্রীতের হাতেই কি ডেরা?

আমার সুরমা ডটকম ডেক্সপ্রায় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি। হরিয়ানার সিরসায় প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে বিশাল সাম্রাজ্য। সেখানে হোটেল, হাসপাতাল, সিনেমা ঘর থেকে গুরমিত রাম রহিম সিংহের কুখ্যাত গুফা। এর সঙ্গেই দেশে ৪৬টি আশ্রম ও আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়া-কানাডায় ভক্তের দল। প্রশ্ন হল, আজ কুড়ি বছরের সাজার পর কে হবেন রাম রহিমের উত্তরাধিকারী?

এই সম্পত্তির উপরে নজর রয়েছে আদালতের। রাম রহিম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে ভক্তদের তাণ্ডবের ক্ষতিপূরণ ওই সম্পত্তি থেকেই দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। সম্পত্তির মূল্য ঠিক কত তা জানাতে রাম রহিমের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। পাশাপাশি সম্পত্তির মূল্যায়নের কাজ শুরু করেছে হরিয়ানা সরকারও। ফলে উত্তরাধিকারীর প্রশ্ন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ২০০৭ সালেই গুরমিত নিজে তাঁর ছেলে জসমিতকে উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ডেরা সচ্চা সৌদার প্রথা অনুযায়ী বর্তমান প্রধানের পরিবারের কেউ এই পদে বসতে পারেন না। তা হলে প্রশ্ন, জেল থেকেই নিজে ডেরা সামলাবেন রাম রহিম? না কি ৩৫ বছরের ব্রহ্মচারী বিপাসনার হাতে রাম রহিম সঁপে দেবেন এই ভার? বিপাসনাই এখন ডেরার ‘নম্বর টু’। ডেরার মহিলা কলেজে পড়েই এখন তিনি রাম রহিমের সবচেয়ে আস্থাভাজন পদাধিকারী। শুক্রবার রায় ঘোষণার পরে হিংসা ছড়ানোর সময় এই বিপাসনাই প্রকাশ্যে এসে বলেছিলেন, ভক্তদের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল দুষ্কৃতীরা।

গুরমিত রাম রহিম ও স্ত্রী হরজিৎ কউর:

কিন্তু ভক্তদের অনেকেই মনে করেন, গুরমিতের দত্তক নেওয়া কন্যা হানিপ্রীতই শেষপর্যন্ত ওই পদ দখল করতে পারেন। এই হানিপ্রীতই সেই মহিলা, যিনি আদালতের রায়ের পরে রাম রহিমের সঙ্গে হেলিকপ্টারে চড়ে পঞ্চকুলা থেকে রোহতক জেল গিয়েছিলেন। রাম রহিম চেয়েছিলেন, জেলেও সঙ্গে থাকুন হানিপ্রীত। আদালত জানায়, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন জেল কর্তৃপক্ষই। কিন্তু জেলে যাওয়ার পরে অফিসারেরা তার অনুমতি দেননি। ক্ষুব্ধ রাম রহিম হুমকি দিয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে বদলি করে দেবেন অফিসারদের। তাতেও জেল প্রশাসন রাজি না হওয়ায় আড়াই ঘণ্টা জেলে থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল হানিপ্রীতকে।

কে এই হানিপ্রীত?

হরিয়ানার ফতেহাবাদের মেয়ে হানিপ্রীতের আসল নাম প্রিয়ঙ্কা তানেজা। তাঁর বাবা-মা গুরমিতের ভক্ত। সেই সুবাদেই ডেরার সঙ্গে যোগাযোগ। অচিরেই গুরমিতের নজরে আসেন প্রিয়ঙ্কা। ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। কিন্তু গুরমিত বিশ্বাস গুপ্ত নামে আর এক ভক্তের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার বিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের পরেও কখনও ডেরার বাইরে যাননি প্রিয়ঙ্কা। জোরাজুরি করতে উল্টে প্রিয়ঙ্কা পণ নিয়ে মামলা ঠুকে দেন স্বামীর বিরুদ্ধে। তারপর বিবাহ বিচ্ছেদও হয়। সাত বছর আগে প্রিয়ঙ্কাকে দত্তক নেন গুরমিত। তখন তাঁর নাম হয় হানিপ্রীত।

গুরমিত স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে:

গুরমিত ও তাঁর স্ত্রী হরজিতের দুই কন্যা ও এক পুত্র রয়েছেন। দুই মেয়েরই বিয়ে হয়েছে। তার মধ্যে এক জামাই ডেরার হাসপাতালের দায়িত্বে রয়েছেন। অন্য জামাই দেখেন ডেরার কৃষিক্ষেত্র। ছেলে দেখেন স্টেডিয়াম ও আবাসনের ব্যবসা। ছেলে জসমিতের বিয়ে হয়েছে কংগ্রেসের এক বিধায়ক-কন্যার সঙ্গে। কিন্তু ছেলে-মেয়েকে ছাপিয়েও হানিপ্রীতই সবথেকে ঘনিষ্ঠ গুরমিতের। গত সাত বছর ধরে গুরমিতের যাবতীয় ছবি, ভিডিও স্রেফ হানিপ্রীতের সঙ্গেই। তাঁর সঙ্গেই সিনেমা তৈরি করেছেন। ‘ফ্রেন্ডশিপ’ দিবসেও একে অন্যের ‘বন্ধু’ সেজে গান গেয়েছেন, ‘‘আই উইশ তেরে জ্যায়সা দোস্ত….।’’

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com